Hathras Stampede এ ১২১ জনের মর্মান্তিক পদপিষ্টনে প্রাণহানির পর, পরদিন সকালেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ভোলে বাবার আশ্রমে অভিযান চালায়। ভোলে বাবার গ্রেফতার কি আসন্ন?

হাথরসের মর্মান্তিক ঘটনার পর ভোলে বাবার গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 121 জনের প্রাণহানির পর উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি বড় দল তার আশ্রমে অভিযান চালিয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর তার ভাগ্যে কী ঘটবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

বুধবারই ঘটনাস্থলে যেতে পারেন উত্তরপ্রদেশের CM Yogi। প্রশাসনের এক আধিকারিক সূত্রে এমনটাই খবর পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আগরার অতিরিক্ত ডিজিপি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পদপিষ্টের ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত কমিটির সদস্যরা ফুলরাই গ্রাম থেকে 100 কিলোমিটার দূরের মৈনপুরি এলাকায় অবস্থিত ভোলেবাবার আশ্রম পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসন কঠোর নির্দেশ দিয়েছে যে, এই ঘটনার সাথে জড়িত সকল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

Hathras Stampede Incident পর বিভিন্ন মহল থেকে নানা প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ দুর্ঘটনার জন্য সৎসঙ্গ আয়োজক কমিটিকে দায়ী করলেও, অনেকে আবার প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলছেন, ভক্তদের অতি উৎসাহ এবং নিয়ন্ত্রণহীন ভিড়ের কারণেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে যে, মঙ্গলবার Hathras নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবার সৎসঙ্গের সমাপ্তির পর হুড়োহুড়ি ও পদপিষ্টের ঘটনায় অন্তত ১২১ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলে বাবা’ নামে স্বঘোষিত এক ধর্মীয় গুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। ‘মানব মঙ্গল মিলন সদ্ভাবনা অনুষ্ঠান কমিটি’র উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অধিকাংশ ভক্তই ছিলেন মহিলা। অনুষ্ঠান শেষে হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, যার ফলে আয়োজক কমিটির দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে।

সেই সময় উপস্থিত কারো কারো ভাষ্য, সৎসঙ্গের আয়োজনের জন্য যে বিশাল প্যান্ডেল খাটানো হয়েছিল, তাতে বাতাস চলাচলের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, এমনকি পাখা পর্যন্ত ছিল না। যদিও প্যান্ডেলের চারপাশে খোলা জায়গা ছিল, কিন্তু আর্দ্রতা আর গরমের কারণে সবাই প্রচণ্ড অস্বস্তি বোধ করছিলেন। এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে সৎসঙ্গ শেষ হতেই সবাই একযোগে মাঠের বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বাইরে যাওয়ার যে রাস্তা ছিল, তা খুবই সরু হওয়ায় প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। অনেকে মাটিতে পড়ে যায় এবং তাদের ওপর দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টায় শতাধিক ভক্ত পদদলিত হয়ে মারা যান।

মঙ্গলবার যখন এই ঘটনা ঘটে তখন লোকসভায় জবাবি ভাষণ দিচ্ছিলেন মোদী। তার মাঝেই বিষয়টি জানতে পেরে ভাষণ থামিয়ে তিনি শোকপ্রকাশ করেন। সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার উদ্ধারকাজ করছে। এর পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছে, ‘‘হাথরসের ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হবে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাও শোকপ্রকাশ করেন। তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে ২৭ জন (২৩ জন মহিলা এবং তিন শিশু)-এর মৃত্যুর খবর শুনলাম। তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই।

অতীতে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মী হিসেবে দাবি করা এই ব্যক্তি, বর্তমানে ধর্মগুরুর বেশে আবির্ভূত হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুর গ্রাম নিবাসী এই ব্যক্তি, ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে 25 বছর পূর্বে গোয়েন্দা বিভাগের চাকরি ত্যাগ করেন। বর্তমানে হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, দিল্লি সহ সারা ভারত জুড়ে তাঁর অসংখ্য অনুগামী রয়েছে। যদিও সমাজমাধ্যমে তাঁর কোনো অস্তিত্ব নেই, তবুও ভক্তদের দাবি, সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাঁর আদর্শ অনুসরণীয় হয়ে উঠেছে।

আলিগড়ে প্রতি মঙ্গলবার একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়, যেখানে ভোলে বাবার ভক্তরা হাজার হাজার সংখ্যায় সমবেত হন। এই অনুষ্ঠানে ভক্তদের জন্য খাবার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়, যার দায়িত্বে থাকেন স্বেচ্ছাসেবকরা। উল্লেখ্য যে, মহামারীর সময় যখন জমায়েত নিষিদ্ধ ছিল, তখনও ভোলে বাবার এই অনুষ্ঠানে শত শত মানুষের সমাগম হত, যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

Leave a Comment